০৯:৩৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ঘটনায় দলীয় সম্পৃক্ততার অভিযোগ ও সমন্বয়কারীর নাম উল্লেখ কমিশনের

বিডিআর হত্যাকাণ্ডে কমিশনের চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা

বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় ০৩:০১:০৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৫
  • / ৬৪ বার পড়া হয়েছে

বিডিআর বিদ্রোহ ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনা তদন্তের জন্য গঠিত জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশন তাদের চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে জমা দিয়েছে। রোববার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় কমিশন প্রধান মেজর জেনারেল (অব.) এ এল এম ফজলুর রহমান ও অন্যান্য সদস্যরা এ প্রতিবেদন হস্তান্তর করেন।

কমিশনের সদস্যদের মধ্যে ছিলেন মেজর জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর কবির তালুকদার (অব.), ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. সাইদুর রহমান বীর প্রতীক (অব.), যুগ্মসচিব (অব.) মুন্সী আলাউদ্দিন আল আজাদ, ডিআইজি (অব.) ড. এম. আকবর আলী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক মো. শরীফুল ইসলাম এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক মো. শাহনেওয়াজ খান চন্দন।

প্রতিবেদন গ্রহণের পর প্রধান উপদেষ্টা বলেন,“বিডিআর হত্যাকাণ্ডের ঘটনার সত্য উদ্‌ঘাটনে কমিশন যে ভূমিকা রেখেছে, তা জাতির জন্য মূল্যবান সম্পদ হয়ে থাকবে।”
তিনি আরও বলেন, দীর্ঘদিনের বহু প্রশ্নের উত্তর এই প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।

কমিশন প্রধান ফজলুর রহমান জানান, ঘটনার ১৬ বছর পর বহু তথ্য-প্রমাণ নষ্ট হয়ে গেলেও সর্বোচ্চ পেশাদারিত্ব বজায় রেখে সত্য উদ্‌ঘাটনের চেষ্টা করা হয়েছে। শতাধিক সাক্ষীর সাক্ষ্য, আগের তদন্ত নথি ও বিভিন্ন তথ্য বিশ্লেষণ করে রিপোর্ট তৈরি করা হয়।

তিনি জানান, ঘটনার পেছনে রাজনৈতিক সম্পৃক্ততার “শক্তিশালী প্রমাণ” পাওয়া গেছে। কমিশনের দাবি, তৎকালীন ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের কিছু ব্যক্তি দলগতভাবে সম্পৃক্ত ছিলেন। এছাড়া জাহাঙ্গীর কবির তালুকদার জানান, এই ঘটনার “মূল সমন্বয়কারীর” ভূমিকা পালন করেন তৎকালীন সংসদ সদস্য শেখ ফজলে নূর তাপস।

কমিশনের মতে, ঘটনাকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করার সিদ্ধান্তের কারণে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। সেনাবাহিনী, পুলিশ, র‍্যাব ও গোয়েন্দা সংস্থার মাঝে সমন্বয়হীনতার কথাও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

কমিশন আরও জানায়, ঘটনা চলাকালে কিছু গণমাধ্যমের ভূমিকা “অপেশাদার” ছিল।
এছাড়া তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে যেসব সদস্যের বৈঠক হয়েছিল, তাদের তালিকা সঠিকভাবে সংরক্ষণ করা হয়নি।

ভবিষ্যতে বাহিনীগুলোর মধ্যে শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা জোরদার এবং ভুক্তভোগীদের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে কমিশন তাদের প্রতিবেদনে বেশকিছু সুপারিশ করে।

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান, প্রতিরক্ষা বিষয়ক বিশেষ সহকারী অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল আব্দুল হাফিজ এবং স্বরাষ্ট্র সচিব নাসিমুল গনি।

নিউজটি শেয়ার করুন

ঘটনায় দলীয় সম্পৃক্ততার অভিযোগ ও সমন্বয়কারীর নাম উল্লেখ কমিশনের

বিডিআর হত্যাকাণ্ডে কমিশনের চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা

আপডেট সময় ০৩:০১:০৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৫

বিডিআর বিদ্রোহ ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনা তদন্তের জন্য গঠিত জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশন তাদের চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে জমা দিয়েছে। রোববার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় কমিশন প্রধান মেজর জেনারেল (অব.) এ এল এম ফজলুর রহমান ও অন্যান্য সদস্যরা এ প্রতিবেদন হস্তান্তর করেন।

কমিশনের সদস্যদের মধ্যে ছিলেন মেজর জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর কবির তালুকদার (অব.), ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. সাইদুর রহমান বীর প্রতীক (অব.), যুগ্মসচিব (অব.) মুন্সী আলাউদ্দিন আল আজাদ, ডিআইজি (অব.) ড. এম. আকবর আলী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক মো. শরীফুল ইসলাম এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক মো. শাহনেওয়াজ খান চন্দন।

প্রতিবেদন গ্রহণের পর প্রধান উপদেষ্টা বলেন,“বিডিআর হত্যাকাণ্ডের ঘটনার সত্য উদ্‌ঘাটনে কমিশন যে ভূমিকা রেখেছে, তা জাতির জন্য মূল্যবান সম্পদ হয়ে থাকবে।”
তিনি আরও বলেন, দীর্ঘদিনের বহু প্রশ্নের উত্তর এই প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।

কমিশন প্রধান ফজলুর রহমান জানান, ঘটনার ১৬ বছর পর বহু তথ্য-প্রমাণ নষ্ট হয়ে গেলেও সর্বোচ্চ পেশাদারিত্ব বজায় রেখে সত্য উদ্‌ঘাটনের চেষ্টা করা হয়েছে। শতাধিক সাক্ষীর সাক্ষ্য, আগের তদন্ত নথি ও বিভিন্ন তথ্য বিশ্লেষণ করে রিপোর্ট তৈরি করা হয়।

তিনি জানান, ঘটনার পেছনে রাজনৈতিক সম্পৃক্ততার “শক্তিশালী প্রমাণ” পাওয়া গেছে। কমিশনের দাবি, তৎকালীন ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের কিছু ব্যক্তি দলগতভাবে সম্পৃক্ত ছিলেন। এছাড়া জাহাঙ্গীর কবির তালুকদার জানান, এই ঘটনার “মূল সমন্বয়কারীর” ভূমিকা পালন করেন তৎকালীন সংসদ সদস্য শেখ ফজলে নূর তাপস।

কমিশনের মতে, ঘটনাকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করার সিদ্ধান্তের কারণে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। সেনাবাহিনী, পুলিশ, র‍্যাব ও গোয়েন্দা সংস্থার মাঝে সমন্বয়হীনতার কথাও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

কমিশন আরও জানায়, ঘটনা চলাকালে কিছু গণমাধ্যমের ভূমিকা “অপেশাদার” ছিল।
এছাড়া তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে যেসব সদস্যের বৈঠক হয়েছিল, তাদের তালিকা সঠিকভাবে সংরক্ষণ করা হয়নি।

ভবিষ্যতে বাহিনীগুলোর মধ্যে শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা জোরদার এবং ভুক্তভোগীদের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে কমিশন তাদের প্রতিবেদনে বেশকিছু সুপারিশ করে।

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান, প্রতিরক্ষা বিষয়ক বিশেষ সহকারী অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল আব্দুল হাফিজ এবং স্বরাষ্ট্র সচিব নাসিমুল গনি।