০১:৪৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ৪ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পুলিশ সুপারকে মুচলেকা দিয়েও আমতলীতে কৃষকের ধান লুট

রাসেল মিয়া আমতলী, বরগুনা
  • প্রকাশের সময় ০১:০৫:২৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫
  • / ৪০ Time View

বরগুনা পুলিশ সুপারকে জমি দখল করবে না বলে লিখিত মুচলেকা দেওয়ার পরও আমতলীতে এক কৃষকের জমির ধান কেটে নিয়ে গেছে ভুমি দস্যুরা। শুধু তাই নয়, ঘটনার বিষয়ে পুলিশকে জানালে কৃষককে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকিও দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

 

ভয়ের কারণে গত দুই দিন ধরে ওই কৃষক ঘর থেকে বের হতে পারেননি। বুধবার (তারিখ) দুপুরে আমতলী সাংবাদিক ইউনিয়ন কার্যালয়ে এসে এসব অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী কৃষক আব্দুল মন্নান আকন। ঘটনাটি ঘটেছে আমতলী উপজেলার আঠারোগাছিয়া ইউনিয়নের পশ্চিম সোনাখালী গ্রামে গত সোমবার দুপুরে।

 

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, পশ্চিম সোনাখালী গ্রামের আব্দুল গাফফার চলতি বছরের ৩ জুলাই মোস্তফা আনোয়ার চৌধুরীর কাছ থেকে দলিলমূলে ২৬ শতাংশ জমি ক্রয় করেন। ওই জমিতে তার বাবা আব্দুল মন্নান আকন আমন ধান রোপণ করেন। ধান রোপণের সময় স্থানীয় ভুমি দস্যু হিসেবে পরিচিত রাসেল প্যাদা, মাহতাব প্যাদা, আলতাফ খাঁন, সামসুল হক মৃধা ও মনির আকন জমির মালিক আব্দুল গাফফারের কাছে তিন লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় তারা ক্ষিপ্ত হয়ে জোরপূর্বক জমি দখল করে নেয় বলে অভিযোগ।

 

এ ঘটনায় কৃষক আব্দুল মন্নান আকন গত ২ অক্টোবর বরগুনা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় পুলিশ সুপার অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন। পরে অভিযুক্ত ভুমি দস্যুরা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে গিয়ে জমি দখল করবে না বলে মুচলেকা দিয়ে আপাতত রক্ষা পায়।

 

কিন্তু সেই মুচলেকা উপেক্ষা করে রাসেল প্যাদা ও মাহতাব প্যাদাসহ ১০–১২ জন ভুমি দস্যু গত সোমবার দুপুরে হারভেস্টার মেশিন দিয়ে ওই জমির ধান কেটে নিয়ে যায়। এ বিষয়ে পুলিশকে জানালে কৃষক আব্দুল মন্নান আকনকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ রয়েছে।

 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি জানান, রাসেল প্যাদা ও মাহতাব প্যাদাসহ তাদের সহযোগীরা প্রকাশ্যেই হারভেস্টার মেশিন ব্যবহার করে ধান কেটে নিয়ে গেছে।

 

ভুক্তভোগী কৃষক আব্দুল মন্নান আকন বলেন, পুলিশ সুপারকে মুচলেকা দিয়েও তারা আমার জমির ধান কেটে নিয়ে গেছে। ধান কেটে নিয়েও ক্ষান্ত হয়নি, পুলিশকে জানালে আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছে। ভয়ে দুই দিন ঘর থেকে বের হতে পারিনি। আমি এই ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।

 

এ বিষয়ে অভিযুক্ত মাহতাব প্যাদা ধান কাটার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ওই জমি আমার ভাই রাসেল চাষ করেছে। স্থানীয়ভাবে মীমাংসায় চাষাবাদের খরচ বাবদ টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। টাকা না দেওয়ায় জমির একাংশের ধান কেটে আনা হয়েছে।

 

আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ জাহাঙ্গির হোসেন বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক লিখিত অভিযোগ দিলে তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Please Share This Post in Your Social Media

পুলিশ সুপারকে মুচলেকা দিয়েও আমতলীতে কৃষকের ধান লুট

প্রকাশের সময় ০১:০৫:২৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫

বরগুনা পুলিশ সুপারকে জমি দখল করবে না বলে লিখিত মুচলেকা দেওয়ার পরও আমতলীতে এক কৃষকের জমির ধান কেটে নিয়ে গেছে ভুমি দস্যুরা। শুধু তাই নয়, ঘটনার বিষয়ে পুলিশকে জানালে কৃষককে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকিও দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

 

ভয়ের কারণে গত দুই দিন ধরে ওই কৃষক ঘর থেকে বের হতে পারেননি। বুধবার (তারিখ) দুপুরে আমতলী সাংবাদিক ইউনিয়ন কার্যালয়ে এসে এসব অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী কৃষক আব্দুল মন্নান আকন। ঘটনাটি ঘটেছে আমতলী উপজেলার আঠারোগাছিয়া ইউনিয়নের পশ্চিম সোনাখালী গ্রামে গত সোমবার দুপুরে।

 

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, পশ্চিম সোনাখালী গ্রামের আব্দুল গাফফার চলতি বছরের ৩ জুলাই মোস্তফা আনোয়ার চৌধুরীর কাছ থেকে দলিলমূলে ২৬ শতাংশ জমি ক্রয় করেন। ওই জমিতে তার বাবা আব্দুল মন্নান আকন আমন ধান রোপণ করেন। ধান রোপণের সময় স্থানীয় ভুমি দস্যু হিসেবে পরিচিত রাসেল প্যাদা, মাহতাব প্যাদা, আলতাফ খাঁন, সামসুল হক মৃধা ও মনির আকন জমির মালিক আব্দুল গাফফারের কাছে তিন লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় তারা ক্ষিপ্ত হয়ে জোরপূর্বক জমি দখল করে নেয় বলে অভিযোগ।

 

এ ঘটনায় কৃষক আব্দুল মন্নান আকন গত ২ অক্টোবর বরগুনা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় পুলিশ সুপার অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন। পরে অভিযুক্ত ভুমি দস্যুরা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে গিয়ে জমি দখল করবে না বলে মুচলেকা দিয়ে আপাতত রক্ষা পায়।

 

কিন্তু সেই মুচলেকা উপেক্ষা করে রাসেল প্যাদা ও মাহতাব প্যাদাসহ ১০–১২ জন ভুমি দস্যু গত সোমবার দুপুরে হারভেস্টার মেশিন দিয়ে ওই জমির ধান কেটে নিয়ে যায়। এ বিষয়ে পুলিশকে জানালে কৃষক আব্দুল মন্নান আকনকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ রয়েছে।

 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি জানান, রাসেল প্যাদা ও মাহতাব প্যাদাসহ তাদের সহযোগীরা প্রকাশ্যেই হারভেস্টার মেশিন ব্যবহার করে ধান কেটে নিয়ে গেছে।

 

ভুক্তভোগী কৃষক আব্দুল মন্নান আকন বলেন, পুলিশ সুপারকে মুচলেকা দিয়েও তারা আমার জমির ধান কেটে নিয়ে গেছে। ধান কেটে নিয়েও ক্ষান্ত হয়নি, পুলিশকে জানালে আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছে। ভয়ে দুই দিন ঘর থেকে বের হতে পারিনি। আমি এই ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।

 

এ বিষয়ে অভিযুক্ত মাহতাব প্যাদা ধান কাটার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ওই জমি আমার ভাই রাসেল চাষ করেছে। স্থানীয়ভাবে মীমাংসায় চাষাবাদের খরচ বাবদ টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। টাকা না দেওয়ায় জমির একাংশের ধান কেটে আনা হয়েছে।

 

আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ জাহাঙ্গির হোসেন বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক লিখিত অভিযোগ দিলে তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।