১৫২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পরীক্ষায় ব্যাপক বিশৃঙ্খলা—অভিভাবকদের দুশ্চিন্তা বেড়েছে
শিক্ষকদের আন্দোলনে আমতলীতে বার্ষিক পরীক্ষা বর্জন ইংরেজি পরীক্ষার বদলে নিল শারীরিক শিক্ষার মৌখিক পরীক্ষা
- আপডেট সময় ১১:২২:১৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১ ডিসেম্বর ২০২৫
- / ৩২ বার পড়া হয়েছে
দশম গ্রেডসহ তিন দফা দাবি আদায়ের আন্দোলনে অংশ নেওয়ায় আমতলী উপজেলার ১৫২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা সোমবার বার্ষিক পরীক্ষা বর্জন করেছেন। নির্ধারিত ইংরেজি বিষয়ের লিখিত পরীক্ষা না নিয়ে অনেক বিদ্যালয়ে দায়সারা ভাবে শারীরিক শিক্ষার মৌখিক পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে। এতে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে চরম হতাশা ও উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।
জানা যায়, দাবিপূরণের আন্দোলনের অংশ হিসেবে গত ৮ নভেম্বর থেকে দেশের প্রাথমিক শিক্ষকরা রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুরোধে ১০ নভেম্বর কর্মসূচি স্থগিত করা হয়, কারণ মন্ত্রণালয় জানায়—তাদের ১১তম গ্রেডের কাজ চলছে। কিন্তু ১৭ দিন পার হলেও কোনো অগ্রগতি না থাকায় শিক্ষকরা পুনরায় আন্দোলনে নামেন।
এর প্রভাব পড়ে সোমবারের পরীক্ষায়। উপজেলার সব বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা ইংরেজি পরীক্ষা বর্জন করেন। পরীক্ষার্থীরা প্রশ্নপত্র না পেয়ে হতবাক হয়ে পড়ে।
সোমবার দুপুরে আমতলী বন্দর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দেখা যায়—প্রধান শিক্ষক জাকির খান শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কক্ষে বসে আছেন, কিন্তু কোনো পরীক্ষার খাতা বা প্রশ্নপত্র বিতরণ করা হয়নি।
আমতলী এমইউ বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী জ্যোতি, রাজদ্বীপ বিশ্বাস ও হিমাদ্রী জানায়—তারা ইংরেজি পরীক্ষা দিতে স্কুলে এলেও, শিক্ষকরা পরীক্ষা নেননি। পরে কিছু শিক্ষার্থীকে শারীরিক শিক্ষার মৌখিক পরীক্ষা দিতে বলা হয়।
অভিভাবক মালামনি বলেন,“শিক্ষকরা পরীক্ষা বর্জন করায় ইংরেজি পরীক্ষা হয়নি। এতে আমাদের বাচ্চাদের ক্ষতি হচ্ছে।”
আঙ্গুলকাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. জাহিদুল ইসলাম লিটন বলেন,“সরকার শিক্ষকদের দাবি না মানায় সহকারী শিক্ষকরা পরীক্ষা বর্জন করেছেন। প্রয়োজনে ছুটির মধ্যে পরীক্ষা নেওয়া হবে।”
আমতলী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো. রবিউল ইসলাম জানান,
“উপজেলার ১৫২টি বিদ্যালয়ের কোনোটিতেই সোমবার লিখিত পরীক্ষা হয়নি।”
তবে আমতলী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. সফিউল আলম দাবি করেন—“বিদ্যালয়গুলোতে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে।”
কোন বিষয়ে পরীক্ষা হয়েছে—এ প্রশ্নের উত্তর তিনি দেননি।
অভিভাবকরা দ্রুত সমাধানের আহ্বান জানিয়ে বলেন—শিক্ষকদের দাবি মানা না হলে শিক্ষার্থীরাই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
















