০৮:৩৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজন, শোভাযাত্রা, সম্মাননা ও অর্জনের পরিসংখ্যান নিয়ে মোংলা বন্দরের ৭৫ বছরের পথচলা উদযাপন

মোংলা বন্দরের প্লাটিনাম জয়ন্তী উদযাপন

শিকদার শরিফুল ইসলাম, মোংলা (বাগেরহাট)
  • আপডেট সময় ১১:৩৯:২৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১ ডিসেম্বর ২০২৫
  • / ৪৬ বার পড়া হয়েছে

0-0x0-0-0#

বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্রবন্দর মোংলা বন্দরের প্লাটিনাম জয়ন্তী উদযাপন করা হয়েছে। আজ বন্দরটির ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে শোভাযাত্রা, আলোচনা সভা ও সম্মাননা প্রদানসহ নানা কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।

সোমবার (১ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত ১২টা ১ মিনিটে বন্দরে অবস্থানরত দেশি-বিদেশি সব জাহাজ এক মিনিট ধরে বিরতিহীন হুইসেল বাজিয়ে দিবসটির সূচনা করে। দুপুর ১২টায় সদর দপ্তর থেকে জেটি ফটক পর্যন্ত র‌্যালির আয়োজন করা হয়, যেখানে বন্দর কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অংশ নেন।

মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল শাহীন রহমান বেলুন ও কবুতর উড়িয়ে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন। পরে জেটির অভ্যন্তরে আলোচনা সভা ও সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সদস্য (হারবার ও মেরিন) কমডোর মো. শফিকুল ইসলাম সরকার, সদস্য (অর্থ) ও পরিচালক (প্রশাসন-অ:দা:) কাজী আবেদ হোসেন, সদস্য (প্রকৌশল ও উন্নয়ন) ড. এ. কে. এম. আনিসুর রহমান, পরিচালক (বোর্ড) কালাচাঁদ সিংহসহ বন্দর কর্মকর্তা-কর্মচারী ও বন্দর ব্যবহারকারীরা।

বন্দরের কৃতিত্বপূর্ণ কাজের স্বীকৃতি হিসেবে ১৩ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে এবং ঝুঁকিপূর্ণ কাজের জন্য ৮ জনকে বিশেষ সম্মাননা দেওয়া হয়। এছাড়া সর্বোচ্চ জাহাজ কয়লা, মাশুল প্রদান, সার, সাধারণ পণ্য, কন্টেইনারবাহী জাহাজ, গাড়িবাহী জাহাজ ইত্যাদি বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ২৯টি প্রতিষ্ঠানকে সম্মাননা প্রদান করা হয়। গত এক বছরে পিআরএল ভোগরত ৫৬ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকেও বিদায় সংবর্ধনা দেওয়া হয়।

১৯৫০ সালের ১ ডিসেম্বর “চালনা পোর্ট” হিসেবে প্রতিষ্ঠিত বন্দরটি বর্তমানে “মোংলা পোর্ট অথরিটি” নামে পরিচিত।

অর্জনের পরিসংখ্যান

বন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে—

  • ২০২৪-২৫ অর্থবছরে কার্গো হ্যান্ডলিং হয়েছে ১ কোটি ৪ লাখ ১২ হাজার মেট্রিক টন, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৫ লাখ ৩২ হাজার টন বেশি (১৭.২৫%)।

  • কন্টেইনার হ্যান্ডলিং হয়েছে ২১ হাজার ৪৫৬ TEUs, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৭.২৮% বেশি

  • রাজস্ব আয় হয়েছে ৩৪৩ কোটি ৩০ লাখ টাকা, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৯ কোটি ৪৬ লাখ বেশি

  • নিট মুনাফা হয়েছে ৬২ কোটি ১০ লাখ টাকা, লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২০৩.৪৯% বেশি

আধুনিক যন্ত্রপাতি কেনা ও নিয়মিত ড্রেজিং কার্যক্রমের ফলে এখন একই সঙ্গে ৫টি জেটিতে জাহাজ হ্যান্ডলিং এবং প্রতি ঘণ্টায় ২৪টিরও বেশি কন্টেইনার হ্যান্ডলিং সম্ভব হচ্ছে।

এছাড়া পোর্ট রিসেপশন ফ্যাসিলিটি (PRF) স্থাপন শেষে উদ্বোধনের অপেক্ষায় রয়েছে, যা নদী ও সামুদ্রিক পরিবেশ সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

মোংলা বন্দর বর্তমানে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অর্থনীতির চালিকাশক্তি হিসেবে খাদ্যশস্য, সার, গ্যাস, গাড়ি, কয়লা, মেশিনারিজসহ নানা পণ্যের আমদানি-রপ্তানিতে বিশেষ ভূমিকা রেখে আসছে। বন্দরকে আধুনিক ও বিশ্বমানের করতে বেশ কয়েকটি উন্নয়ন প্রকল্প চলমান রয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজন, শোভাযাত্রা, সম্মাননা ও অর্জনের পরিসংখ্যান নিয়ে মোংলা বন্দরের ৭৫ বছরের পথচলা উদযাপন

মোংলা বন্দরের প্লাটিনাম জয়ন্তী উদযাপন

আপডেট সময় ১১:৩৯:২৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১ ডিসেম্বর ২০২৫

বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্রবন্দর মোংলা বন্দরের প্লাটিনাম জয়ন্তী উদযাপন করা হয়েছে। আজ বন্দরটির ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে শোভাযাত্রা, আলোচনা সভা ও সম্মাননা প্রদানসহ নানা কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।

সোমবার (১ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত ১২টা ১ মিনিটে বন্দরে অবস্থানরত দেশি-বিদেশি সব জাহাজ এক মিনিট ধরে বিরতিহীন হুইসেল বাজিয়ে দিবসটির সূচনা করে। দুপুর ১২টায় সদর দপ্তর থেকে জেটি ফটক পর্যন্ত র‌্যালির আয়োজন করা হয়, যেখানে বন্দর কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অংশ নেন।

মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল শাহীন রহমান বেলুন ও কবুতর উড়িয়ে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন। পরে জেটির অভ্যন্তরে আলোচনা সভা ও সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সদস্য (হারবার ও মেরিন) কমডোর মো. শফিকুল ইসলাম সরকার, সদস্য (অর্থ) ও পরিচালক (প্রশাসন-অ:দা:) কাজী আবেদ হোসেন, সদস্য (প্রকৌশল ও উন্নয়ন) ড. এ. কে. এম. আনিসুর রহমান, পরিচালক (বোর্ড) কালাচাঁদ সিংহসহ বন্দর কর্মকর্তা-কর্মচারী ও বন্দর ব্যবহারকারীরা।

বন্দরের কৃতিত্বপূর্ণ কাজের স্বীকৃতি হিসেবে ১৩ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে এবং ঝুঁকিপূর্ণ কাজের জন্য ৮ জনকে বিশেষ সম্মাননা দেওয়া হয়। এছাড়া সর্বোচ্চ জাহাজ কয়লা, মাশুল প্রদান, সার, সাধারণ পণ্য, কন্টেইনারবাহী জাহাজ, গাড়িবাহী জাহাজ ইত্যাদি বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ২৯টি প্রতিষ্ঠানকে সম্মাননা প্রদান করা হয়। গত এক বছরে পিআরএল ভোগরত ৫৬ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকেও বিদায় সংবর্ধনা দেওয়া হয়।

১৯৫০ সালের ১ ডিসেম্বর “চালনা পোর্ট” হিসেবে প্রতিষ্ঠিত বন্দরটি বর্তমানে “মোংলা পোর্ট অথরিটি” নামে পরিচিত।

অর্জনের পরিসংখ্যান

বন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে—

  • ২০২৪-২৫ অর্থবছরে কার্গো হ্যান্ডলিং হয়েছে ১ কোটি ৪ লাখ ১২ হাজার মেট্রিক টন, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৫ লাখ ৩২ হাজার টন বেশি (১৭.২৫%)।

  • কন্টেইনার হ্যান্ডলিং হয়েছে ২১ হাজার ৪৫৬ TEUs, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৭.২৮% বেশি

  • রাজস্ব আয় হয়েছে ৩৪৩ কোটি ৩০ লাখ টাকা, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৯ কোটি ৪৬ লাখ বেশি

  • নিট মুনাফা হয়েছে ৬২ কোটি ১০ লাখ টাকা, লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২০৩.৪৯% বেশি

আধুনিক যন্ত্রপাতি কেনা ও নিয়মিত ড্রেজিং কার্যক্রমের ফলে এখন একই সঙ্গে ৫টি জেটিতে জাহাজ হ্যান্ডলিং এবং প্রতি ঘণ্টায় ২৪টিরও বেশি কন্টেইনার হ্যান্ডলিং সম্ভব হচ্ছে।

এছাড়া পোর্ট রিসেপশন ফ্যাসিলিটি (PRF) স্থাপন শেষে উদ্বোধনের অপেক্ষায় রয়েছে, যা নদী ও সামুদ্রিক পরিবেশ সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

মোংলা বন্দর বর্তমানে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অর্থনীতির চালিকাশক্তি হিসেবে খাদ্যশস্য, সার, গ্যাস, গাড়ি, কয়লা, মেশিনারিজসহ নানা পণ্যের আমদানি-রপ্তানিতে বিশেষ ভূমিকা রেখে আসছে। বন্দরকে আধুনিক ও বিশ্বমানের করতে বেশ কয়েকটি উন্নয়ন প্রকল্প চলমান রয়েছে।