১০:২৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৫, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
চরমোনাই মাহফিলে সুষ্ঠু নির্বাচন, জাতীয় ঐক্য ও আদর্শিক কল্যাণ রাষ্ট্র গঠনের আহ্বান

সুযোগ এসেছে ৫৪ বছর পর হাতে হাত ধরার — ধর্মবিষয়ক উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালেদ হোসাইন

বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় ০২:৩৩:১১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৫
  • / ৫ বার পড়া হয়েছে

ধর্মবিষয়ক উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালেদ হোসাইন বলেছেন—“৫৪ বছর পরে সুযোগ এসেছে হাতে হাত ধরার। সুযোগ বারবার আসে না, তাই ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।”
বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) চরমোনাইয়ের ঐতিহাসিক অগ্রহায়ণ মাহফিলের দ্বিতীয় দিনে উলামা-মাশায়েখ ও দ্বীনদার বুদ্ধিজীবী সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির ও চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত আলেম-ওলামারাও বক্তব্য রাখেন।

ধর্মবিষয়ক উপদেষ্টা বলেন,
“যদি আমরা খোলাফায়ে রাশেদিনের আদলে একটি আদর্শিক কল্যাণ রাষ্ট্র গঠন করতে চাই, তবে একে অপরের হাত ধরতে হবে। টান যদি শেষ হয়ে যায়, সেইদিন আমাদের পতন ঘটবে।”

তিনি আরও বলেন,
“যেখানে দিবেন—সেখানেই দিনদার, পরহেজগার ও নীতিবান মানুষ রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় না এলে বারবার ভুল হবে, দুর্যোগ নেমে আসবে। স্বপ্ন মানুষকে বাঁচিয়ে রাখে।”

নির্বাচন প্রসঙ্গে মন্তব্য

চলতি ফেব্রুয়ারির প্রথমদিকে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন,
“এটা আমাদের শর্ট টার্ম প্রজেক্ট। দেশবাসী চেষ্টা করবে সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দিতে। কেন্দ্র পাহারা দেওয়া ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করার দায়িত্ব আপনাদেরও। সরকার ‘ল’ ও এজেন্সি নিয়ে প্রস্তুত থাকবে, তবে জনগণকে পাশে থাকতে হবে যাতে কেউ ব্যালট বাক্স ছিনতাই করতে না পারে।”

তিনি আরও বলেন,
“আমরা আশা করি সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে যে সরকার আসবে তারা অসমাপ্ত কাজগুলো সমাপ্ত করবে এবং জাতির প্রত্যাশা পূরণ করবে। আলেমদের সংসদে পাঠাতে পারলে দেশের চেহারা বদলে যাবে।”

অপব্যাখ্যা ও ধর্মবিদ্বেষ নিয়ে সতর্কবার্তা

ধর্মবিষয়ক উপদেষ্টা বলেন,
“ধর্মকে ব্যঙ্গ করা বা অপব্যাখ্যা করে জনগণের সেন্টিমেন্ট উস্কে দেওয়ার ক্ষমতা কারো নেই। ইসলাম সম্পর্কে কথা বলতে হলে সেটা আলেমদের ঐক্যমতের মাধ্যমেই হতে হবে। না হলে সংঘাত অনিবার্য হয়ে পড়ে।”

তিনি আরও বলেন,
“২০০ আসন যদি আদর্শিক মানুষ দিয়ে পূর্ণ করা যায়, তাহলে রাষ্ট্রীয় কাঠামো পাল্টে যাবে। মন্ত্রী-উপদেষ্টা দিয়েই সব অর্জন হবে না; পার্লামেন্টে তাকওয়াবান মানুষ থাকতে হবে।”

রাষ্ট্র পরিচালনা প্রসঙ্গে

তিনি বলেন,
“আমরা দায়িত্ব নেওয়ার সময় দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল মাত্র ২০ মিলিয়ন ডলার, এখন তা ৩২-এর ওপরে। ১৫–১৬ মাসে ১৬ বছরের জঞ্জাল পরিষ্কার করা যায় না। যে কাঠামো আগে থেকে তৈরি ছিল, সেই কাঠামোর ভেতরেই আমরা দেশ পরিচালনা করছি। অনেক অর্জন হয়েছে, কিছু হয়নি—যেটুকু হয়নি, আগামী দিনের সরকার করবে।”

তিনি আরও বলেন,
“আইন হাতে তুলে নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। ধর্মের নামে বিশৃঙ্খলা বা অপব্যাখ্যা করলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না; সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে।”

নিউজটি শেয়ার করুন

চরমোনাই মাহফিলে সুষ্ঠু নির্বাচন, জাতীয় ঐক্য ও আদর্শিক কল্যাণ রাষ্ট্র গঠনের আহ্বান

সুযোগ এসেছে ৫৪ বছর পর হাতে হাত ধরার — ধর্মবিষয়ক উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালেদ হোসাইন

আপডেট সময় ০২:৩৩:১১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৫

ধর্মবিষয়ক উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালেদ হোসাইন বলেছেন—“৫৪ বছর পরে সুযোগ এসেছে হাতে হাত ধরার। সুযোগ বারবার আসে না, তাই ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।”
বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) চরমোনাইয়ের ঐতিহাসিক অগ্রহায়ণ মাহফিলের দ্বিতীয় দিনে উলামা-মাশায়েখ ও দ্বীনদার বুদ্ধিজীবী সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির ও চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত আলেম-ওলামারাও বক্তব্য রাখেন।

ধর্মবিষয়ক উপদেষ্টা বলেন,
“যদি আমরা খোলাফায়ে রাশেদিনের আদলে একটি আদর্শিক কল্যাণ রাষ্ট্র গঠন করতে চাই, তবে একে অপরের হাত ধরতে হবে। টান যদি শেষ হয়ে যায়, সেইদিন আমাদের পতন ঘটবে।”

তিনি আরও বলেন,
“যেখানে দিবেন—সেখানেই দিনদার, পরহেজগার ও নীতিবান মানুষ রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় না এলে বারবার ভুল হবে, দুর্যোগ নেমে আসবে। স্বপ্ন মানুষকে বাঁচিয়ে রাখে।”

নির্বাচন প্রসঙ্গে মন্তব্য

চলতি ফেব্রুয়ারির প্রথমদিকে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন,
“এটা আমাদের শর্ট টার্ম প্রজেক্ট। দেশবাসী চেষ্টা করবে সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দিতে। কেন্দ্র পাহারা দেওয়া ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করার দায়িত্ব আপনাদেরও। সরকার ‘ল’ ও এজেন্সি নিয়ে প্রস্তুত থাকবে, তবে জনগণকে পাশে থাকতে হবে যাতে কেউ ব্যালট বাক্স ছিনতাই করতে না পারে।”

তিনি আরও বলেন,
“আমরা আশা করি সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে যে সরকার আসবে তারা অসমাপ্ত কাজগুলো সমাপ্ত করবে এবং জাতির প্রত্যাশা পূরণ করবে। আলেমদের সংসদে পাঠাতে পারলে দেশের চেহারা বদলে যাবে।”

অপব্যাখ্যা ও ধর্মবিদ্বেষ নিয়ে সতর্কবার্তা

ধর্মবিষয়ক উপদেষ্টা বলেন,
“ধর্মকে ব্যঙ্গ করা বা অপব্যাখ্যা করে জনগণের সেন্টিমেন্ট উস্কে দেওয়ার ক্ষমতা কারো নেই। ইসলাম সম্পর্কে কথা বলতে হলে সেটা আলেমদের ঐক্যমতের মাধ্যমেই হতে হবে। না হলে সংঘাত অনিবার্য হয়ে পড়ে।”

তিনি আরও বলেন,
“২০০ আসন যদি আদর্শিক মানুষ দিয়ে পূর্ণ করা যায়, তাহলে রাষ্ট্রীয় কাঠামো পাল্টে যাবে। মন্ত্রী-উপদেষ্টা দিয়েই সব অর্জন হবে না; পার্লামেন্টে তাকওয়াবান মানুষ থাকতে হবে।”

রাষ্ট্র পরিচালনা প্রসঙ্গে

তিনি বলেন,
“আমরা দায়িত্ব নেওয়ার সময় দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল মাত্র ২০ মিলিয়ন ডলার, এখন তা ৩২-এর ওপরে। ১৫–১৬ মাসে ১৬ বছরের জঞ্জাল পরিষ্কার করা যায় না। যে কাঠামো আগে থেকে তৈরি ছিল, সেই কাঠামোর ভেতরেই আমরা দেশ পরিচালনা করছি। অনেক অর্জন হয়েছে, কিছু হয়নি—যেটুকু হয়নি, আগামী দিনের সরকার করবে।”

তিনি আরও বলেন,
“আইন হাতে তুলে নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। ধর্মের নামে বিশৃঙ্খলা বা অপব্যাখ্যা করলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না; সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে।”