১১:১১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৫, ৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিশু নিরাপত্তা সংকট

দশমিনায় দেড় বছরে পানিতে ডুবে ৩৬ শিশুর মৃত্যু

রবিউল হাসান ডব্লিউ
  • আপডেট সময় ০৯:৩০:০৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৫
  • / ১৫৪ বার পড়া হয়েছে

দশমিনা উপজেলায় গত দেড় বছরে পানিতে ডুবে শিশুমৃত্যুর মর্মান্তিক চিত্র দিন দিন ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে চলতি বছরের অক্টোবর পর্যন্ত উপজেলায় মোট ৬৭টি শিশু পানিতে ডুবে দুর্ঘটনায় পড়ে। এর মধ্যে চিকিৎসা ও দ্রুত উদ্ধার করে ৩১ শিশুকে বাঁচানো সম্ভব হলেও ৩৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই মৃত্যু-তালিকা স্থানীয় সমাজে গভীর শোক ও উদ্বেগ ছড়িয়ে দিয়েছে।

সর্বশেষ দুর্ঘটনাটি ঘটে ২১ অক্টোবর চরবোরহান ইউনিয়নের উত্তর চরশাহজালাল গ্রামে। রাফি (৪) নামের ওই শিশু ছিলেন সিদ্দিক বেপারী ও শারমিন বেগমের একমাত্র সন্তান। পরিবারের সদস্যরা জানান, খেলতে খেলতে সবার অগোচরে রাফি বাড়ির পাশের পুকুরে পড়ে যায়। কয়েক ঘণ্টা খোঁজাখুঁজির পর পুকুর থেকেই তার নিথর দেহ উদ্ধার করা হয়। সন্তান হারিয়ে শারমিন বেগম মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন। পুরো গ্রামে নেমে আসে শোকের ছায়া।

স্থানীয়ভাবে ধারণা করা হচ্ছে—উপকূলীয় অঞ্চলের প্রায় প্রতিটি বাড়ির চারপাশে পুকুর বা জলাশয় থাকায় অল্প বয়সী শিশুরা খানিকটা অসতর্ক হলেই দুর্ঘটনার শিকার হয়। চরবোরহান ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান মো. ফরহাদ আকন বলেন,
“সচেতনতাই এখানে মূল বিষয়। পানি তো আমাদের চারপাশেই। অভিভাবকদের এক মুহূর্তের অসাবধানতাই বড় দুর্ঘটনায় পরিণত হয়।”

দশমিনা উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন,
“প্রতিটি পরিবারকে শিশুদের সুরক্ষায় আরও সতর্ক হতে হবে। শিশুদের সাঁতার শেখানোর উদ্যোগ এবং জলাশয়ের আশপাশে নজরদারি বৃদ্ধি করলে মৃত্যুর হার অনেক কমে যাবে।”

স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, প্রতি বছরই এমন দুর্ঘটনা ঘটে, কিন্তু স্থায়ী প্রতিরোধমূলক উদ্যোগ নেওয়া হয় না। তারা শিশু নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নিয়মিত সচেতনতা, প্রশিক্ষণ এবং স্থানীয় সরকার ও স্বাস্থ্য বিভাগের যৌথ কর্মসূচি গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

শিশু নিরাপত্তা সংকট

দশমিনায় দেড় বছরে পানিতে ডুবে ৩৬ শিশুর মৃত্যু

আপডেট সময় ০৯:৩০:০৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৫

দশমিনা উপজেলায় গত দেড় বছরে পানিতে ডুবে শিশুমৃত্যুর মর্মান্তিক চিত্র দিন দিন ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে চলতি বছরের অক্টোবর পর্যন্ত উপজেলায় মোট ৬৭টি শিশু পানিতে ডুবে দুর্ঘটনায় পড়ে। এর মধ্যে চিকিৎসা ও দ্রুত উদ্ধার করে ৩১ শিশুকে বাঁচানো সম্ভব হলেও ৩৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই মৃত্যু-তালিকা স্থানীয় সমাজে গভীর শোক ও উদ্বেগ ছড়িয়ে দিয়েছে।

সর্বশেষ দুর্ঘটনাটি ঘটে ২১ অক্টোবর চরবোরহান ইউনিয়নের উত্তর চরশাহজালাল গ্রামে। রাফি (৪) নামের ওই শিশু ছিলেন সিদ্দিক বেপারী ও শারমিন বেগমের একমাত্র সন্তান। পরিবারের সদস্যরা জানান, খেলতে খেলতে সবার অগোচরে রাফি বাড়ির পাশের পুকুরে পড়ে যায়। কয়েক ঘণ্টা খোঁজাখুঁজির পর পুকুর থেকেই তার নিথর দেহ উদ্ধার করা হয়। সন্তান হারিয়ে শারমিন বেগম মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন। পুরো গ্রামে নেমে আসে শোকের ছায়া।

স্থানীয়ভাবে ধারণা করা হচ্ছে—উপকূলীয় অঞ্চলের প্রায় প্রতিটি বাড়ির চারপাশে পুকুর বা জলাশয় থাকায় অল্প বয়সী শিশুরা খানিকটা অসতর্ক হলেই দুর্ঘটনার শিকার হয়। চরবোরহান ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান মো. ফরহাদ আকন বলেন,
“সচেতনতাই এখানে মূল বিষয়। পানি তো আমাদের চারপাশেই। অভিভাবকদের এক মুহূর্তের অসাবধানতাই বড় দুর্ঘটনায় পরিণত হয়।”

দশমিনা উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন,
“প্রতিটি পরিবারকে শিশুদের সুরক্ষায় আরও সতর্ক হতে হবে। শিশুদের সাঁতার শেখানোর উদ্যোগ এবং জলাশয়ের আশপাশে নজরদারি বৃদ্ধি করলে মৃত্যুর হার অনেক কমে যাবে।”

স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, প্রতি বছরই এমন দুর্ঘটনা ঘটে, কিন্তু স্থায়ী প্রতিরোধমূলক উদ্যোগ নেওয়া হয় না। তারা শিশু নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নিয়মিত সচেতনতা, প্রশিক্ষণ এবং স্থানীয় সরকার ও স্বাস্থ্য বিভাগের যৌথ কর্মসূচি গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।